জন্য মৃত্যুঝুঁকি নিতে রাজি বেজোস!
চাইলে কি না পারেন ধনকুবের জেফ বেজোস? যেকোনো কিছুর মালিকই হতে পারেন তিনি। ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে পুরো পৃথিবী আর মহাকাশযানে পুরো মহাকাশ উড়ে বেড়াতে পারেন তিনি। যেকোনো দ্বীপ কিনে নিতে পারেন অনায়াসে। ৬৫ হাজার বুগেতি শিরন গাড়ি কেনার ক্ষমতা আছে তার, যেখানে মাত্র ৫০০ গাড়ি বানানো হচ্ছে। কোনো কিছুই তার জন্য অসম্ভব না। অথচ তিনি ঝুঁকি নিয়েছেন মহাকাশ যাবেন, সেখানে থাকবেন ১১ মিনিট।
ঝুঁকিপূর্ণ এ সিদ্ধান্তের পেছনে রহস্য কী?
উত্তরটা কিছুটা অস্বাভাবিক। মহাকাশে ভ্রমণ রীতিমতো বিপদজনক। জেফ বেজোসের এ ঝুঁকি না নিলেও চলতো। তার প্রতিষ্ঠিত মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিন গেল ১ দশকে বেশ ভালো অগ্রগতি দেখিয়েছে। তৈরি করেছে নিউ শেফার্ড রকেট, এরইমধ্যে কয়েকবার পরীক্ষামূলকভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে এ রকেট।
জেফ বেজোস আর তার ভাই মার্ক বেজোস নিলামে জিতেছেন। প্রথম ক্রুসহ নিউ শেফার্ড নিয়ে মহাকাশ অভিযানে যাবেন তারা।
স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে এই সাব অরবিটাল রকেট আর স্পেসক্রাফট সিস্টেম। যারা টিকিট কিনবেন, তাদেরও নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু পুরো যাত্রাটা মোটেও ঝুঁকিমুক্ত নয়। মহাকাশে পৌঁছানোর পর স্পেসক্রাফটে থাকা সব মানুষের জীবন থাকবে অনিশ্চয়তায়।
স্পেস ফ্লাইটের কথা মাথায় আসলেই ভাবা হয়, একটি মহাকাশযান পৃথিবীর চারপাশে ঘুরছে, মহাকাশে ভাসছে। জেফ বেজোস আর তার ভাই এ কাজ করছেন না। তারা সরাসরি উপরে যাবেন আর নিচে নেমে আসবেন। মাত্র ১১ মিনিটে করবেন এ কাজ।
অরবিটাল ফ্লাইট আর সাবঅরবিটাল ফ্লাইটের পার্থক্য অনেক। ব্লু অরিজিনের ফ্লাইট পৃথিবীর থেকে ৬২ মাইল উপরে যাবে। অরবিটাল রকেটগুলো ঘণ্টায় ১৭ হাজার মাইল পর্যন্ত ওড়ার সক্ষমতা রাখে। সাব অরিটাল রকেটগুলো কম পাওয়ার আর স্পিডে চলে। যে কারণে দুর্ঘটনার সুযোগ কম।
নিউ শেফার্ডের সাব অরবিটাল ফ্লাইট ঘণ্টায় ২ হাজার ৩০০ মাইল স্পিডে যাবে। সরাসরি উপরে উঠবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না জ্বালানির বেশিরভাগটাই শেষ হয়ে যায়। এরপর রকেট থেকে ক্রু ক্যাপসুল আলাদা হয়ে যাবে। যাত্রীরা কিছুক্ষণের জন্য নিজেদের ওজন অনুভব করবেন না। এরপর স্পেস ক্যাপসুলটি প্যারাসুট ছেড়ে দেবে। প্যারাসুটগুলো ঘণ্টায় ২০ মাইল বেগে নিচে নামতে থাকবে পৃথিবীতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত। রকেট নিজের মতো উড়ে নিচে নামতে থাকবে।
ব্লু অরিজিনের নিউ শেফার্ড ক্যাপসুল স্বাধীন একটি মহাকাশযান, এটি পরিচালনার জন্য কোনো পাইলটের প্রয়োজন নেই।
ঝুঁকি কম থাকলেও একেবারে যে নেই, তাও না। কারণ পৃথিবীর কক্ষপথ অতিক্রম করে আবার ফিরে আসলে মহাকাশযানের বাহ্যিক তাপমাত্রা সাড়ে ৩ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছাবে। অতিরিক্ত গতি আর উচ্চতার কারণে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
স্পেসস্যুট ছাড়া ৫০ হাজার ফিট উপরে কোনো মানুষ বাঁচতে পারে না। আর বেজোস সেখানে ৩ লাখ ৫০ হাজার ফিট উপরে থাকবেন। তবে অক্সিজেন মাস্ক থাকায় খুব বেশি সমস্যাও হবে না।
সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই বেজোস উড়বেন আকাশে। সফল মহাকাশ অভিযান পরিচালনার জন্য মৃত্যুঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত তিনি। যদিও পরীক্ষামূলকভাবে ফ্লাইট পরিচালনার সময় ভয়াবহ কোন দুর্ঘটনার শিকার হয়নি মহাকাশযানগুলো।
প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ